অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের ভিতর দিয়ে আজকের বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম। ব্রিটিশ আমলে এই ভূখণ্ডের মানুষ পরাধীনতার বেদনায় পীড়িত ছিল। উনিশশো সাতচল্লিশ সালের পনেরোই আগস্টের স্বাধীনতাপূর্ব-পাকিস্তানের বাঙালির মনে মুক্তির হাওয়া বইয়ে দেয়। কিন্তু ঐ সাতচল্লিশ সালেই বাঙালির ভাষার উপরে এল আঘাত। উর্দু পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা হবে বলে পূর্ব-পাকিস্তানের বিদ্যালয়গুলোতে উর্দু শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হল। জানা গেল, আপিস-আদালতের কাজও হবে উর্দুতে। সঙ্গে-সঙ্গে বুদ্ধিজীবী মহল আর সচেতন ছাত্রসমাজে আপত্তি আর প্রতিবাদের ঝড় উঠল। স্বাধীনতার পর বাংলা ভাষা বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের এই বৈরী মনোভাব পূর্ব-পাকিস্তানের বাঙালিকে ক্ষুব্ধ করল। তারা পরিষ্কার বুঝতে পারল ঐ ভাষাবৈর বাঙালি সংস্কৃতির মূলে আঘাত হানছে। কারণ, ভাষাই ঐতিহ্যাশ্রিত সংস্কৃতির প্রধান বাহন। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সংগ্রামের ইতিবৃত্ত আর ক্রমধারা উপস্থিত সংকলনের উপজীব্য।