কলকাতার গ্রামসমাজ তখন নাগরিক চেহারা নিচ্ছে। সে নগরের সমাজমুখ্যরা ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির প্রতিনিধি। ইংরেজি জানা সাহেবি কেতাদুরস্ত বাঙালি যেমন আছেন, তেমনি আছেন সনাতনী, নব্য হিন্দু। এ দুইয়ের মাঝে আছে আর একটি অংশ যারা ইংরেজি শিখেছেন, কিন্তু বাঙালিয়ানাও বজায় রাখতে জানেন। এই ভিন্ন ধারার প্রতিনিধিস্থানীয়রাই হুতুমপ্যাঁচার ‘লক্ষান্তর্বর্তী’। তবে পূর্বসূরিদের মতো কেবলমাত্র মুখরোচক আদিরসধর্মী কেচ্ছা-কেলেংকারি নয়, ধনাঢ্যের আর্থিক কেলেংকারিও হুতুমের লেখার বিষয় হয়েছে। আর এসেছে জাতপাত ধর্মাচরণসংশ্লিষ্ট প্রসঙ্গ। নগরসমাজের বহমান লোকসংস্কৃতির পার্বণ যেমন নকশার বিষয় তেমনি সতীদাহরোদ, বিধবা বিবাহ, শিক্ষাব্যবস্থা। তাঁর নকশার ইতিহাসের প্রেক্ষাপট অনেকটাই ছড়ানো। যে সময়ের মানুষ ছিলেন তিনি, তাঁর পূর্ববর্তী কালপর্ব আশ্রয় করেই লেখা হয়েছে অধিকাংশ নকশা। ভাষাভঙ্গি লোকমুখে নিত্য উচ্চারিত কথার মতো, নিরাভরণ ও সরস। শব্দবহুল পন্ডিতী ভাষার প্রতিতুলনায় তা অমার্জিত, অকুলীন এবং বলা বাহুল্য প্রাণময়, ধারালো ও শক্তিশালী।
There are no reviews yet.