১৯১৭। কাফকা তখন ৩৪। ৯ই আগস্ট রাতে কাশির সঙ্গে উঠে এলো রক্ত। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় ধরা পড়লো ফুসফুসের যক্ষা। তিন মাসের ছুটি পেলেন আপিস থেকে। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় চলে গেলেন বোহেমিয়া অঞ্চলের জুরাউ গ্রামে, তাঁর ছোট বোন ওটিলির কাছে।
পাহাড়তলির ছোট এক গ্রাম জুরাউ। চারিদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে জঙ্গল, তৃণভূমি। সেই সেপ্টেম্বর থেকে পরের বছরের এপ্রিল, মোট আট মাস কাফকা ছিলেন জুরাউতে।
এখানে এসেই, প্রথম দিনেই, কাফকার মনে হয়েছিল জায়গাটা ‘বড় বেশী আনন্দের’, এতটাই, যে একটা শব্দও যদি তিনি লেখেন, তা হবে ‘শয়তানের জোগান দেওয়া খেই’, তাই তিনি ঠিক করেন কিছুই লিখবেন না এখানে।
দিন তিনেক বাদে, সেপ্টেম্বর ১৫ই, কাফকা তাঁর ডায়রিতে লেখেন, “তোমার সুযোগটা তুমি পেয়েছো, সুযোগ ব’লে আদৌ যদি কিছু থেকে থাকে, আবার নতুন করে শুরু করার সুযোগ। এটা নষ্ট ক’রে ফেলো না।”
“সুযোগ” কাফকা নষ্ট করেননি, অবশ্যই। দুটো অক্টেভো নোটবুকে লিখে রেখেছিলেন তাঁর ভাবনাচিন্তা, অনুভূতি, “রিফ্লেকশানস”। তার থেকে বেছে নিয়ে আলাদা করে লিখে রেখেছিলেন, কোনো নাম না দিয়ে, ১০৩টি পাতলা, পিঁয়াজের খোসার রঙের কাগজে, প্রত্যেক পৃষ্ঠার ওপরে ডানদিকে রচনাগুলির ক্রমিক সংখ্যা দিয়ে, এই অনুভূতিমালা।
There are no reviews yet.